শিমের উপকারিতা - শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান
আমরা বাংলাদেশী। তাই আমরা খুব সবজি প্রিয়। সবুজ সবজি আমাদের খুব প্রিয়। দুপুরে বা রাতের খাবারে সবুজ সবজি ছাড়া যেন আমাদের চলেই না। প্রিয় পাঠক, আজকে আমি এমন একটি সবুজ সবজি নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনাদের সবার প্রিয়। হুম, ঠিকই ধরেছেন, শিমের উপকারিতা ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান নিয়ে আলোচনা করবো।
দেশীয় শিমে অধিক মাত্রায় প্রোটিন থাকায় এটি খুব সুস্বাদু ও পুুষ্টিকর। আমাদের শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিপূরণ ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য শিমের উপকারিতা ব্যপক। আজকের পোস্টটি পড়লে শিমের উপকারিতা ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান গুলি বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পেইজ কন্টেন্ট সূচিপত্রঃ শিমের উপকারিতাঃ
মানব দেহের জন্য শিম ফলের গুরুত্ব
বাংলাদেশে এই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর শিম ফলের চাষ ব্যপক। আমাদের দেশে এই সবজির চাহিদা ও জনপ্রিয়তা অনেক। সবজি হিসেবে এই শিম ফলটি যেমন সহজলভ্য, তেমনি আবার পুষ্টি সমৃদ্ধ। প্রতি ১০০ গ্রাম শিমে রয়েছে ৩.৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৭ গ্রাম শর্করা, ১.৭ গ্রাম আইরোন ও ২১০ মি.গ্রাম ক্যালসিয়াম। এছাড়াও শিমে ভিটামিন-সি, জিঙ্ক ও নানা রকম খনিজ উপাদান আছে।
ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে শিমের গুরুত্ব অনেক। শিম ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান মানব দেহের হাড়কে সুগঠিত করে। শিমে সিলিকন জাতীয় উপাদান থাকায় কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে এবং শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।
নিচে শিমের উপকারিতা ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান নিয়ে আলোচনা থাকছে, যা পড়ে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাই শিমের উপকারিতা ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান গুলো জানার জন্য এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, মানব দেহের জন্য শিম ফলের গুরুত্ব কত।
মানব দেহের জন্য শিমের উপকারিতা
আমাদের দেশে জনপ্রিয় শিম গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে শিম। মানব দেহের জন্য শিমের উপকারিতা অনেক। শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। শীত কালীন সবজি হিসেবে শীতে শিম খেলে ত্বক ভালো থাকে। মানব দেহের জন্য শিমের উপকারিতা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হচ্ছে।
ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
বর্তমান সময়ে মানব দেহের বিভিন্ন রোগের মধ্যে ডায়াবেটিকস হচ্ছে একটি সচরাচর রোগ। কাউকে একবার এই ডায়াবেটিকস ধরলে এই সমস্যা থেকে আর বের হওয়ার উপায় নেই। তাই এই ডায়াবেটিকস সমস্যা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য মানুষ কত কিনা-ই করে।
তাই শিমের উপকারিতা হিসেবে ডায়বেটিকস নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য আপনি সবজি হিসেবে শিম খেতে পারেন। কারণ, শিম খেলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
হৃদরোগ বর্তমান সময়ে প্রায় মানুষেরই হয়ে থাকে। হৃদরোগ কমানোর জন্য শিমের উপকারিতা অনেক। তাই আপনি যদি নিয়মিত শিম খান, তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে শিমের উপকারিতা অনেক। শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান অর্থাৎ শিমের বিচিতে ভিটামিন বি-৬ এর পরিমাণ বেশি থাকে, যার ফলে স্নায়ুতন্ত্র সুস্থ থাকে, ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
এলার্জি সমস্যার প্রতিকারক
আপনি যদি এলার্জি সমস্যায় ভূগেন, তাহলে আপনি যদি নিয়মিত শিম খান, শিমের উপকারিতা হিসেবে আপনার এলার্জি সমস্যার প্রতিকার হিসেবে কাজ করবে।
মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে সহায়ক
আপনার যদি মাথা ব্যথা অর্থাৎ মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে, তাহলে আপনি নিয়মিত শিম খেতে পারেন। কারণ, শিমের উপকারিতা হিসেবে শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান আপনার মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতে বেশ কার্যকর।
চুল পড়া কমায়
শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান অর্থাৎ শিমে যে খনিজ উপাদান গুলো আছে, সেগুলো চুল পড়া প্রতিরোধ করে ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। তাই আপনি শিমের উপকারিতা হিসেবে শিম খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
আপনি যদি নিয়মিত শিম খান, তাহলে শিমের উপকারিতা হিসেবে শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান অর্থাৎ শিমের বিচিতে যে খনিজ উপাদান গুলো আছে, সেগুলো আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।
গর্ভবর্তী মহিলা ও শিশুর পুষ্টি যোগায়
গর্ভবর্তী মহিলারা নিয়মিত শিম খেতে পারেন। কারণ, শিমে যে ক্যালসিয়াম ও আইরোন আছে, সেগুলো গর্ভবর্তী মহিলার জন্য বেশ জরুরী। এছাড়া শিশুর অপুষ্টি দূর করতে শিমের উপকারিতা অনেক।
ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে
ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করতে সিমের উপকারিতা অনেক। আপনি যদি নিয়মিত শিম খান, তাহলে শিমের বিচির পুষ্টি উপাদন গুলো আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃ বেশি ঘুমালে কি ক্ষতি হয়?
হাড় মজবুত করে
আপনার শিশুকে শিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ, শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে যে সিলিকোনজাতীয় উপাদানটি আছে, সেটি শিশুর হাড় মজবুত করে। তাই শিশুর হাড় মজবুত করার জন্য শিমের উপকারিতা অনেক।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
শরীরের ওজন কমাতে শিমের উপকারিতা অনেক। কারণ, শিমের আঁশ আপনার পাকস্থলীকে দ্রুত ভরে ফেলে। ফলে আপনি কম খাবার খেয়েও পেট ভরাতে পারবেন। এছাড়া শিম খেলে রক্তে চিনি আসার পরিমানও কমে যায়। যার ফলে আপনার ওজন কম বৃদ্ধি পায়।
শেষ কথা
শিম শীতকালীন সবজি হিসেবে আমাদের দেশে একটি জনপ্রিয় খাবার। আর এই শিমে প্রচুর পরিমান প্রোটিন, ভিটামিন-সি, জিঙ্ক, মিনারেল ও ফাইবার আছে। এই উপাদান গুলো মানব দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। আর শিমের বিচি শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।
আর শিমের উপকারিতা ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদান গুলো শরীরের যে শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় তা নয়, রোগকে শরীর থেকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে।
প্রিয় পাঠক, আশা করি, মানব দেহের জন্য শিমের উপকারিতা ও শিমের বিচির পুষ্টি উপাদন গুলো ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন। আর আমাদের এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করুন, যাতে অন্যেরাও পড়ে উপকৃত হতে পারে।
ধন্যবাদ
শওকত রাশেল
ওয়ানলাইফ আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url