কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার - কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায়
আসসালামু অলাইকুম! আজকে আপনার ও আপনার পরিবারের উপকারে আসবে এমন একটি টিপস নিয়ে আলোচনা করবো ইনশায়াল্লাহ! কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার - কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা। হুম! আজকের আলোচনার মূল বিষয় বস্তু হল কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার - কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায়।
প্রিয় পাঠক, কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার তা নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করার জন্য চেষ্টা করবো ইনশায়াল্লাহ। কৃমির লক্ষণ ও ঘরোয়া প্রতিকার, কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় - সেই সব বিষয় গুলো সকলেরই জানা প্রয়োজন।
কৃমির লক্ষণ ও ঘরোয়া প্রতিকার, কৃমি হলে কি কি সমস্যা হয়? আসলে অনেকেই জানেনা যে, কৃমি মানুষের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর। আর এই কৃমি কিভাবে জটিল সব রোগের সৃষ্টি করে ও আকস্মিক মৃত্যু ডেকে আনে সে সব বিষয়েও সাধারণ মানুষ সজাগ নয়।
আরো পড়ুনঃ কৃমি হওয়ার লক্ষণ ও কৃমি দূর করার উপায়
পেইজ কন্টেন্ট সূচিপত্রঃ কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার - কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা - কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায়
কৃমি সমস্যা পরিচিতি
পেটে কৃমি আছে কি না কিভাবে বুঝবেন?, অতিরিক্ত কৃমি হলে করণীয়, বড়দের কৃমি দূর করার উপায়, ছোটদের কৃমি দূর করার উপায় কি খেলে কৃমি হয়?, কৃমি হলে কি কি সমস্যা হয়?, কৃমি হওয়ার লক্ষণ , বাচ্চাদের কৃমির সংক্রমণ, শিশুদের কৃমির চিকিৎসা, কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম।
তাই কৃমি কিভাবে মানুষের মৃত্যু ঘটায়? কৃমি হলে কি কি সমস্যা হয়? - তা যদি জানতে চান, তাহলে এই সব বিষয় নিয়ে আমার আরেকটি আর্টিকেল আছে, সেই আর্টিকেলটি পড়ে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন। আশা করি, আপনার অনেক উপকারে আসবে।
কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার - কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা - কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায়
আমার মনে হয়, এতক্ষুণ আপনি পেটে কৃমি আছে কি না কিভাবে বুঝবেন? অতিরিক্ত কৃমি হলে করণীয় কি, কি খেলে কৃমি হয়? কৃমি হওয়ার লক্ষণ, কৃমি হলে কি কি সমস্যা হয়? শিশুদের কৃমির চিকিৎসা, বড়দের কৃমি দূর করার উপায় এই সব বিষয় গুলো নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন। তবে এবার আমি আপনাদের জন্য কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার বা কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা নিয়ে আলোচনা করবো।
আরো পড়ুনঃ কিভাবে নিজেকে স্মার্ট করবেন?
অনেকেই কৃমি দূর করতে ঔষুধ সেবন করে থাকেন। তবে আপনি চাইলে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার উপায়েও কৃমি দূর করতে পারবেন। তাই কি খেলে পেটের কৃমি মারা যায়? কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা গুলো জানতে হলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কাঁচা রসুন
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে একটি হল কাঁচা রসুন। তাই কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে আপনি কাঁচা রসুন খেতে পারেন। কারণ এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাঁচা রসুন খুব ভালো কাজ করে।
কাঁচা রসুন বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন ধরনের ফাংগাস ধ্বংস করতে সক্ষম। তাই আপনি কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার ও কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে কাঁচা রসুন সেবন অথবা কাঁচা রসুনের জুস করে খেতে পারেন।
লবঙ্গ সেবন
কৃমি সমস্যায় ভূগছেন? ওষুধ ছাড়ায় মিলবে কৃমি থেকে মুক্তি। কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় এর আরেকটি হল লবঙ্গ। কারণ লবঙ্গ কলেরা, ম্যালেরিয়া, যক্ষা ইত্যাদি প্রতিরোধ করতে সক্ষম। এছাড়া আপনি যদি নিয়মিত লবঙ্গ সেবন করেন, তাহলে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ফাংগাস ইত্যাদি থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। কৃমি দূর করার উপায় হিসেবে আপনি লবঙ্গ সেবন করতে পারেন।
আদার রস সেবন
ওষুধ ছাড়ােই কৃমি সমস্যার মুক্তি মিলেবে, পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কৃমি দূর করার উপায় ও কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে আপনি আদার রস সেবন করতে পারেন। কারণ, পেট ফাঁপা ও হজমের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে পারে এই আদার রস।
বদ হজম বা হজমের সমস্যা, পেট ফাঁপা, পেটে ইনফেকশন, অ্যাসিডিটি ইত্যাদি সমস্যার জন্য আদার রস খুব কার্যকরী। তাই কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় আপনি আদার রস সেবন করতে পারেন।
শশার বীজ গুড়ো সেবন
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় এর আরেকটি হল শশার বীজ। কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে শশার বীজ গুড়ো খুবই কার্যকর। ফিতাকৃমি ধ্বংশ করতে শশার দানা সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে প্রতিদিন আপনি বা ভূক্তভোগীকে এক চা চামচ করে সেবন করান। তাহলে দেখবেন, খুব দ্রুতই আপনি বা ভূক্তভোগী ফিতাকৃমি থেকে মুক্তি পাবেন।
পেঁপে ও পেঁপের বীজ
প্রিয় পাঠক, কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় আরেকটি হল পেঁপে। কারণ, কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে পেঁপে ও পেঁপের বীজ খুবই কার্যকর। কারণ পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর করতে পেঁপে ও পেঁপের বীজের থেকে ভালো কিছু হয় না।
তাই পেঁপের বীজ যে কোন ধরণের কৃমি তাড়াতে শ্রেষ্ঠ উপায় হিসেবে কাজ করে। তাই কৃমি দ্রুত দূর করার উপায় হিসেবে ভালো ফল পেতে হলে পেঁপে, পেঁপের বীজ ও মধু সেবন করুন।
কাঁচা হলুদের রস
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় এর আরেকটি হল কাঁচা হলুদের রস। অতিরিক্ত কৃমি হলে করণীয় উপায় হিসেবে আপনি বা ভূক্তভোগীকে কাঁচা হলুদের রস খাওয়াতে পারেন। কারণ, কাঁচা হলুদের রস অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে ভালো কাজ করে। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদের রস খালি পেটে খান।
প্রয়োজনে আপনি আধা কাপ কুসুম গরম পানিতে সামান্য হলুদ গুঁড়ো ও লবন মিশিয়ে খেতে পারেন বা ভূক্তভোগীকে খাওয়াতে পারেন। কৃমি থেকে রেহাই পাওয়ার উপায় হিসেবে কাঁচা হলুদের রস খুবই কার্যকর। তাই কাঁচা হলুদের রস নিয়মিত ১ সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাবেন।
নারিকেল
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে আরেকটি হল নারিকেল। কৃমি দূর করার উপায় হিসেবে নারিকেল খুবই কার্যকরী মাধ্যম। তাই কৃমির তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে আপনি নারিকেল কুচি খেতে পারেন। এর কিছুক্ষুণ পর এক গ্লাস গরম দুধের সাথে ক্যাস্টর অয়েল ২ টেবিল চামচ পরিমাণ মিশিয়ে খান। এতে বেশ ভালো রেজাল্ট পাবেন।
মিষ্টি কুমড়োর বীজ
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় হিসেবে মিষ্টি কুমড়োর বীজ খুবই কার্যকর। তাই কৃমি দূর করতে মিষ্টি কুমড়োর বীজ সেবন করতে পারেন। তাই কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে ৩ কাপ পানির মধ্যে ২ টেবিল চামচ মিষ্টি কুমড়োর বীজের গুঁড়ো মিশিয়ে আধা ঘন্টা সেদ্ধ করুন।
এরপর তা ঠান্ডা করে ১ সপ্তাহ সকালে খালি পেটে সেবন করুন। এছাড়া আপনি প্রয়োজনে ১ টেবিল চামচ মিষ্টি কুমড়োর বীজের গুঁড়োর সাথে প্রয়োজনমত মধু মিশিয়েও সেবন করতে পারেন। এভাবে ১ সপ্তাহ নিয়মিত খেলে বেশ ভালো উপকার পাবেন।
গাজর
কৃমি দূর করার উপায় গাজর খুবই উপকারী। কারণ, গাজরের বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও জিঙ্ক কৃমি প্রতিরোধ করতে খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে আপনি গাজর সেবন করুন।
আনারস
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় হিসেবে আনারস খুবই কার্যকর। কারণ আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ব্রোমেলিন এনজাইম। তাই কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে আপনি বা ভূক্তভোগীকে আনারস খাওয়ান। গবেষণায় দেখা গিয়েছে একজন কৃমি ভূক্তভোগীকে যদি পরপর ৩/৪ দিন আনারস খাওয়ানো যায়, তাহলে সে কৃমি থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাবে।
অ্যাপল সিডার ভিনেগার
কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় হিসেবে আপনি অ্যাপল সিডার ভিনেগার সেবন করতে পারেন। কারণ, কারণ অ্যাপল সিডার ভিনেগার যদি খালি পেটে খাওয়া যায়, তাহলে পেটে প্রচুর পরিমাণে অ্যাসিডিটি বাড়বে। আর এই অ্যাসিডিটি শরীরে প্যারাসাইট ও জীবানুর লার্ভা বা পরজীবি হিসেবে কৃমিকে মারতে সাহায্য করবে।
কিছু সাবধানতা অবলম্বন
কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে আপনি কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে পারেন। আমাদের দেশের শিশুদের একটি বড় সমস্যা হল কৃমি সমস্যা। দূষিত ও নোংরা বা অপরিচ্ছন্ন খাবার, মলমূত্র ও মাটি থেমে মূলত কৃমি বিস্তার লাভ করে। কৃমি আক্রান্ত ব্যক্তি যদি মাটিতে মলমূত্র ত্যাগ করে, তাহলে সেখানকার মাটিকে দূষিত করে ও সুস্থ মানুষকে আক্রান্ত করে।
অস্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন, দূষিত পানি, বড় নখ, শৌচাগার শেষে সাবান দিয়ে হাত না ধৌত করা, না ধুয়ে কাঁচা ফলমূল খাওয়া ও পরিমাণ মত সিদ্ধ না করে খাবার খাওয়া কৃমি বিস্তারের জন্য দায়ী। আাবর খালি পায়ে টয়লেটে যাওয়া ও মাটিতে খালি পায়ে হাঁটা কৃমিতে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। তাই কৃমি দূর করার একটি প্রধান উপায় হিসেবে আপনি ও আপনার শিশুকে এই সব বিষয়ে সচেতন করুন।
কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম
কৃমি দূর করার উপায় হিসেবে আপনি কিছু ওষুধ সেবন করতে পারেন। যেমন আমাদের দেশে কৃমির ওষুধ হিসেবে অ্যালবেনডাজল, মেবেনডাজল পাওয়া যায়। এই সব ওষুধ ঠান্ডা দিনের রাতে খালি পেটে বা ভরা পেটে খেতে পারেন, বা ভূক্তভোগীকে খাওয়াতে পারেন। শিশুর মলদ্বার যদি চুলকায়, তাহলে শিশুর মলদ্বার পরিস্কার করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে রাখতে হবে।
শিশুদের কৃমির চিকিৎসা
প্রিয় পাঠক, শিশুদের কৃমির চিকিৎসা হিসেবে উপরে বর্ণিত কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার এর উপায় গুলো ফলো করতে পারেন। এছাড়া আপনি আপনার শিশুকে চিকিৎসকের পরামর্শে কৃমির কিছু ওষুধ সেবন করাতে পারেন।
শিশুদের কৃমিনাশক ওষুধ হিসেবে সবচেয়ে নিরাপদ হল কম মাত্রার অ্যালবেন্ডাজল বা মেবেন্ডাজল। তবে ওষুধ সেবন করার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, কৃমি দূর করার উপায়, কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার, কৃমি তাড়াতে ঘরোয়া টোটকা, কৃমি দূর করতে ঘরোয়া উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি, কৃমির ঘরোয়া প্রতিকার এই উপায়গুলো আপনার অনেক কাজে লাগবে।
আর বেশি কথা বলতে চাই না, শেষ কথা হিসেবে একটি কথাই বলতে চাই, আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লেগে থাকে বা আপনার উপকার হয়, তাহলে এই পোস্টটি অবশ্যই শেয়ার করুন, যাতে অন্যরাও পড়ে উপকৃত হতে পারে।
আর এতক্ষুণ আমাদের এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই রকম তথ্য ভিত্তিক আরো পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখন। (শওকত রাশেল)
ওয়ানলাইফ আইটিরনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url